মিহরাব (আরবি:محراب)মসজিদ-স্থাপত্যে এক অবিচ্ছেদ্য অংশ - যা মূলতইসলাম ধর্মেরক্বিবলা বা উপাসনার দিক লক্ষ করে তৈরি করা হয়। মুসলমানদের ক্বিবলা যেহেতু এখনক্বাবা ঘর বাআল-মসজিদুল হ্বারাম, তাই মসজিদের অবস্থান থেকে সেদিকে অবতলভাবে এই স্থাপত্য-নকশা করা হয়ে থাকে। যেমন: মসজিদের অবস্থান থেকে ক্বিবলার দিক উত্তর দিকে হলে, মসজিদের উত্তরদিকের দেয়ালে মিহরাব করা হবে। মসজিদের সম্মুখভাগে বাড়তি একটি অংশ বানিয়ে সাধারণত মিহরাব তৈরি করা হয়, যেখানে ইমাম দাঁড়িয়ে নামাযে নের্তৃত্ব দেন।
একটি মসজিদের সাধারণত তিনটি অংশ থাকে- (১)জুল্লাহ বা নামাযঘর, (২)সাহন বা চত্বর, এবং (৩)রিত্তয়াক বা চারদিকের ছাউনিযুক্ত বারান্দা। তন্মধ্যে 'মিহরাব', নামাযঘরের অংশ বিবেচিত হয়।[১]
মেহরাবকে মেহরাব নামকরণ করার ব্যাপারে কয়েকটি মতামত পাওয়া যায়। সবচেয়ে বিশুদ্ধ মত হলো এই, মেহরাবের আভিধানিক অর্থ মজলিসের অগ্রভাগ। মেহরাব যেহেতু মসজিদের অগ্রভাগেই অবস্থিত, যা কিবলার দিকে দেয়ালের মধ্যখানে ইমামের দাঁড়ানোর স্থান নির্ধারণ করার জন্য নির্মাণ করা হয়। তাই মেহরাবকে মেহরাব বলে নামকরণ করা হয়েছে।[২]
মিহরাবে যেহেতু ইমাম দাঁড়িয়ে নামাযে নের্তৃত্ব দেন, তাই মিহরাবের অবস্থান, সাধারণ নামায-আদায়কারীদের সারির একটু সামনে করা হয়ে থাকে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা সম্পূর্ণ একসারি পরিমাণ দীর্ঘায়িত করে নামাযঘরের বাইরের দিকে বাড়তি অংশে করা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে মিহরাব ডিম্বাকৃতিতে অবতলভাবে বাইরের দিকে তৈরি করা হয়ে থাকে। তবে আয়তাকৃতি কিংবা গোলাকৃতির মিহরাবও বিরল নয়।
মিহরাবে যেহেতু ইমাম নামায আদায় করেন, তাই সেখানে সাধারণত জায়নামায পাতা থাকে। এর একপাশে রাখা থাকে মিম্বর বা মিন্বার, যা মূলত একটা মঞ্চ, যেখানে দাঁড়িয়ে ইমাম, তার পেছনে নামায আদায়কারীদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা (খুৎবা) দিয়ে থাকেন। মিম্বর সর্বনিম্ন তিনধাপ থেকে বহুধাপবিশিষ্ট উঁচু মঞ্চও হয়ে থাকে।