সুপ্রাচীন কাল থেকেইভারতীয় উপমহাদেশঅর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ওসাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য সুপরিচিত। ঐতিহাসিকসিন্ধু সভ্যতা এই অঞ্চলেই গড়ে উঠেছিল। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে এখানেই স্থাপিত হয়েছিল বিশালাকার একাধিকসাম্রাজ্য। নানা ইতিহাস-প্রসিদ্ধ বাণিজ্যপথ এই অঞ্চলের সঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য সভ্যতার বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রক্ষা করত।হিন্দু,বৌদ্ধ,জৈন ওশিখ—বিশ্বের এই চার ধর্মের উৎসভূমি ভারত। খ্রিস্টীয় প্রথম সহস্রাব্দেজরাথুষ্ট্রীয় ধর্ম (পারসি ধর্ম),ইহুদি ধর্ম,খ্রিস্টধর্ম ওইসলাম এ দেশে প্রবেশ করে এবং ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ থেকেইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ধীরে ধীরে ভারতীয় ভূখণ্ডের অধিকাংশ অঞ্চল নিজেদের শাসনাধীনে আনতে সক্ষম হয়। উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে এই দেশ পুরোদস্তুর একটিব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয়ে ওঠে। অতঃপর, এক সুদীর্ঘস্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৪৭ সালে ভারত একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্ররূপে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৫০ সালেসংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে ভারত একটি সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়।
ভারত ১৯৫০ সাল থেকে একটি যুক্তরাষ্ট্রীয়প্রজাতন্ত্র, এবং গণতান্ত্রিক সংসদীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে শাসিত একটি রাষ্ট্র। এটি একটিবহুত্ববাদী,বহুভাষিক এবংবহু-জাতিগত সমাজ। ভারতের জনসংখ্যা ১৯৫১ সালে ৩৬১ মিলিয়ন থেকে ২০২২ সালে প্রায় ১.৪ বিলিয়নে বেড়েছে।[২৪] একই সময়ে, এর নামমাত্র মাথাপিছু আয় বার্ষিক US$৬৪ থেকে US$২,৬০১ বেড়েছে এবং এর সাক্ষরতার হার ১৬.৬% থেকে ৭৪% হয়েছে।[২৫] ভারত একটি দ্রুত বর্ধনশীল প্রধান অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে এবং একটি বিস্তৃত মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সাথে তথ্য প্রযুক্তি পরিষেবার একটি কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে।[২৬] ভারতের বেশ কয়েকটি পরিকল্পিত বা সম্পূর্ণবহির্জাগতিক মিশন সহ একটিমহাকাশ কর্মসূচি রয়েছে। এটি চতুর্থ দেশ যেটি চাঁদে একটি নৈপুণ্য অবতরণ করেছে এবংচন্দ্রের দক্ষিণ মেরুরলুনার পয়েন্টে ৬০০কিলোমিটার (৩৭০মা.) যার মধ্যে এটি করা প্রথম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।[২৭]ভারতীয় চলচ্চিত্র,সঙ্গীত এবংআধ্যাত্মিক শিক্ষা বিশ্ব সংস্কৃতিতে ক্রমবর্ধমান ভূমিকা পালন করে।[২৮] ভারত তার দারিদ্র্যের হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করেছে, যদিও অর্থনৈতিক বৈষম্য বৃদ্ধির মূল্যে।[২৯] ভারত একটিপারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র, যেটি সামরিক ব্যয়ের দিক থেকে শীর্ষস্থানীয় দেশ গুলোর মধ্যে একটি।কাশ্মীর নিয়ে তার প্রতিবেশীপাকিস্তান ওচীনের সাথে বিরোধ রয়েছে, যা বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে এখনো অমীমাংসিত।[৩০] আর্থ-সামাজিক চ্যালেঞ্জগুলির মধ্যে ভারতের মুখোমুখি হচ্ছেলিঙ্গ বৈষম্য,শিশুর অপুষ্টি, এবং ক্রমবর্ধমান বায়ু দূষণ।[৩১][৩২] চারটিজীববৈচিত্র্যের হটস্পট সহ ভারতের ভূমি মেগাবৈচিত্র্যময়।[৩৩] এর মোট আয়তনের ২১.৭%বনভূমি।[৩৪] ভারতের বন্যপ্রাণী, যা ঐতিহ্যগতভাবে ভারতের সংস্কৃতিতে সহনশীলতার সাথে দেখা হয়, এই বনের মধ্যে এবং অন্যত্র সুরক্ষিত আবাসস্থলে সমর্থিত।[৩৫]
ভারত (হিন্দি:भारत,প্রতিবর্ণীকৃত: ভারৎউচ্চারিত [ˈbʱaːɾət](শুনুনⓘ)) নামটির উৎপত্তি চন্দ্রবংশীয়পৌরাণিক রাজাভরতের নামানুসারে হয়েছিল। কথিত আছে এইবর্ষ বা অঞ্চলটি রাজা ভরতকে দান করা হয়েছিল বলে এর নামভারতবর্ষ।ভারত শব্দটি,ভারতীয় মহাকাব্য ও ভারতের সংবিধান উভয়েই উল্লিখিত,[৩৬][৩৭] অনেক ভারতীয় ভাষায় শব্দটি ভিন্নতর উচ্চারণে ব্যবহৃত হয়। এটি ঐতিহাসিক নামভারতবর্ষ-এর একটি আধুনিক উপস্থাপনা, যা মূলতউত্তর ভারতে প্রযোজ্য,[৩৮][৩৯]ভারতঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে ভারতের একটি স্থানীয় নাম হিসেবে বর্ধিত প্রচলন অর্জন করে।[৩৬][৪০]
অক্সফোর্ড ইংরেজি অভিধান (তৃতীয় সংস্করণ, ২০০৯) অনুসারে ইংরেজি "ইন্ডিয়া" (Indiaইন্ডিঅ্য) নামটিধ্রুপদী লাতিন শব্দইন্দিআ (India) থেকে নেওয়া হয়েছে, এটিদক্ষিণ এশিয়া এবং এর পূর্ব দিকের একটি অনিশ্চিত অঞ্চলকে উল্লেখ করে। শব্দটি ধারাবাহিকভাবেহেলেনিস্টিক গ্রিক ভাষায়ইন্দিআ (Ἰνδία),প্রাচীন গ্রিক ভাষায়ইন্দোস্ (Ἰνδός),ফার্সি ভাষা ভাষায়আকিমিনীয় সাম্রাজ্যের একটি পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ হিসাবেহিন্দুশ এবং শেষ পর্যন্ত সগোত্রীয় সংস্কৃত শব্দসিন্ধু থেকে উদ্ভূত হয়,সিন্ধু শব্দটি দ্বারা বিশেষতসিন্ধু নদ ও এর জনবসতি যুক্ত দক্ষিণ অববাহিকাকে উল্লেখ করা হয়।[৪১][৪২]প্রাচীন গ্রিকরা ভারতীয়দেরইন্দোই (Ἰνδοί) হিসাবে উল্লেখ করেছিল, যার বঙ্গানুবাদ হল "সিন্ধু অঞ্চলের মানুষ"।[৪৩]
মধ্যপ্রদেশ রাজ্যেরভীমবেটকা প্রস্তর ক্ষেত্র ভারতে মানববসতির প্রাচীনতম নিদর্শন। এক লক্ষ বছর আগেও এখানে মানুষের বসবাস ছিল।[৪৫][৪৬] প্রায় ৯০০০ বছর আগে এদেশে স্থায়ী মানববসতি গড়ে উঠে; যা কালক্রমে পশ্চিম ভারতের ইতিহাস-প্রসিদ্ধসিন্ধু সভ্যতার রূপ ধারণ করে।[৪৭] এই সভ্যতার আনুমানিক সময়কাল ৩৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ। এরপর ভারতেবৈদিক যুগের সূত্রপাত হয়। এই যুগেইহিন্দুধর্ম তথা প্রাচীন ভারতীয় সমাজের অন্যান্য সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যগুলির আবির্ভাব ঘটে। বৈদিক যুগের সমাপ্তিকাল আনুমানিক ৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ। আনুমানিক ৫৫০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ নাগাদ ভারতে প্রতিষ্ঠিত হয়মহাজনপদ নামে অনেকগুলি স্বাধীন রাজতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক রাজ্য।[৪৮]
খ্রিষ্টীয় দশম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে মধ্য এশিয়া থেকে ভারতেইসলামের অনুপ্রবেশ ঘটে। এর ফলে সমগ্র উত্তর ভারত প্রথমেসুলতানি ও পরেমুঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়।মহামতি আকবরের রাজত্বকালে দেশে একাধারে যেমন সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির সূচনা হয়, তেমনই প্রতিষ্ঠিত হয় হিন্দু-মুসলমানের ধর্মীয় সম্প্রীতি।[৫১][৫২] ক্রমে ক্রমে মুঘল সম্রাটগণ উপমহাদেশের এক বৃহৎ অংশে নিজেদের কর্তৃত্ব স্থাপনে সক্ষম হন। যদিওউত্তর-পূর্বাঞ্চলে প্রাধান্যকারীঅসমেরঅহোম রাজশক্তি এবং আরও কয়েকটি রাজ্য মুঘল আগ্রাসন সফলভাবে প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছিল।
প্রারম্ভিক আধুনিক ভারত
ষোড়শ শতক থেকেপর্তুগাল,নেদারল্যান্ডস,ফ্রান্স ওব্রিটিশ যুক্তরাজ্যের মতোইউরোপীয় শক্তিগুলি ভারতে বাণিজ্যকুঠি স্থাপন করতে শুরু করে। পরবর্তীকালে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক গোলযোগের সুযোগ নিয়ে তারা ভারতে উপনিবেশ স্থাপন করতেও সক্ষম হয়।
আধুনিক ভারত
১৮৫৬ সালের মধ্যেই ভারতের অধিকাংশ অঞ্চলব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হস্তগত হয়েছিল।[৫৩] এর এক বছর পরেই ঘটে ভারতীয় সিপাহি ও দেশীয় রাজ্যগুলির সম্মিলিত এক জাতীয় গণ-অভ্যুত্থান। ভারতের ইতিহাসে এই ঘটনাভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ বাসিপাহি বিদ্রোহ নামে পরিচিত। এই বিদ্রোহ ব্যর্থ হলেও তা দেশে কোম্পানির শাসনের দুর্বলতার দিকগুলি উন্মোচিত করে দেয়। তাই ভারতকে আনা হয়ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের প্রত্যক্ষ শাসনাধীনে।
বিংশ শতকেভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ও অন্যান্যরাজনৈতিক সংগঠনগুলি দেশজুড়েস্বাধীনতা আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটায়। ভারতীয় নেতামহাত্মা গান্ধী লক্ষাধিক মানুষকে সঙ্গে নিয়ে অহিংস গণ-আইন অমান্য জাতীয় আন্দোলন শুরু করেন।[৫৪] স্বাধীনতা আন্দোলনের শেষলগ্নেসুভাষচন্দ্র বসু ও তারআজাদ হিন্দ ফৌজের সংগ্রাম ভারতের ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের১৫ আগস্ট ভারত ব্রিটিশ শাসনজাল থেকে মুক্তিলাভ করে। একই সঙ্গে দেশের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের মুসলমান-অধ্যুষিত অঞ্চলগুলিবিভক্ত হয়ে গঠন করেপাকিস্তান রাষ্ট্র।[৫৫] ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি নতুন সংবিধান প্রবর্তনের মধ্য দিয়ে ভারতে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র স্থাপিত হয়।[৫৬]
ভারতীয় উপমহাদেশের সিংহভাগ নিয়ে গঠিত ভারতীয় ভূখণ্ডটিভারতীয় টেকটোনিক পাত ওইন্দো-অস্ট্রেলীয় পাতের মধ্যস্থিত একটি গৌণ পাতের উপর অবস্থিত।[৫৯] এই ভূখণ্ড গঠনের প্রধান ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়াটি শুরু হয় আজ থেকে ৭৫ কোটি বছর পূর্বে, যখন দক্ষিণের অতিমহাদেশগন্ডোয়ানার অংশ হিসাবে ভারতীয় উপমহাদেশ উত্তর-পূর্ব দিকে সরতে শুরু করে। তৎকালীন অসংগঠিতভারত মহাসাগরব্যাপী এই সরণ স্থায়ী হয় ৫০ কোটি বছর।[৫৯] এর পরে উপমহাদেশটির সঙ্গেইউরেশীয় পাতের সংঘর্ষ ঘটে এবং উপমহাদেশের পাতটি ইউরেশীয় পাতের তলায় অবনমিত হয়ে পৃথিবীর উচ্চতম পর্বতমালাহিমালয়ের উত্থান ঘটায়। এই পর্বতমালা বর্তমানে ভারতের উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিক বেষ্টন করে আছে।[৫৯] উত্থানশীল হিমালয়ের দক্ষিণ পাদদেশে অবস্থিত সমুদ্রে পাতসঞ্চরণের ফলে একটি বৃহৎ খাত সৃষ্টি হয়, এবং কালক্রমে নদীর পলি জমে[৬০] এই খাতটি গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলে পরিণত হয়।[৬১] এই সমভূমির পশ্চিমেআরাবল্লী পর্বতশ্রেণী কর্তৃক বিচ্ছিন্ন হয়ে অবস্থান করছেথর মরুভূমি।[৬২] মূল ভারতীয় পাতটি আজ ভারতীয় উপদ্বীপ রূপে অবস্থান করছে। এটিই ভারতের প্রাচীনতম ও ভৌগোলিকভাবে সর্বাপেক্ষা দৃঢ় অংশ। উত্তরদিকে মধ্য ভারতে অবস্থিতসাতপুরা ওবিন্ধ্য পর্বতমালা পর্যন্ত এই উপদ্বীপ বিস্তৃত। এই সমান্তরাল পর্বতমালাদুটি পশ্চিমেগুজরাটেরআরব সাগর উপকূল থেকে পূর্বেঝাড়খণ্ডেরকয়লা-সমৃদ্ধ ছোটনাগপুর মালভূমি পর্যন্ত ব্যাপ্ত।[৬৩] দক্ষিণে উপদ্বীপীয় ভূখণ্ডেদাক্ষিণাত্য মালভূমি বামে ও ডানে যথাক্রমেপশ্চিমঘাট ও পূর্বঘাট পর্বতমালাদ্বয় দ্বারা উপকূলীয় সমভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন।[৬৪] এই মালভূমিতেই ভারতের প্রাচীনতম প্রস্তরগঠনটি পরিলক্ষিত হয়; যার কিয়দংশের বয়স ১০০ কোটি বছরেরও বেশি। এইভাবে ভারত বিষুবরেখার উত্তরে ৬°৪৪' ও ৩৫°৩০' উত্তর অক্ষাংশ[৬৫] ও ৬৮°৭' ও ৯৭°২৫' পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত।[৬৬]
ভারতীয় উপকূলরেখার দৈর্ঘ্য ৭,৫১৭ কিলোমিটার (৪,৬৭১ মাইল)। এর মধ্যে ৫,৪২৩ কিলোমিটার (৩,৩৭০ মাইল) ভারতীয় উপদ্বীপের এবং ২,০৯৪ কিলোমিটার (১,৩০১ মাইল) আন্দামান, নিকোবর ও লাক্ষাদ্বীপের অন্তর্গত।[২২] ভারতীয় নৌবাহিনীর হাইড্রোগ্রাফিক চার্ট অনুসারে মূল অঞ্চলের উপকূলভূমি ৪৩% বালুকাময় সৈকত, ১১% পাথুরে উপকূল ও ভৃগু (উঁচু খাড়া পাড় বা ক্লিফ), ৪৬% জলাজমিপূর্ণ উপকূল দ্বারা গঠিত।[২২]
সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান; বিশ্বের বৃহত্তম নদী-বদ্বীপ গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চলে অবস্থিত এই বনাঞ্চলটি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রসারিত
হিমালয় থেকে উৎপন্ন নদনদীগুলির মধ্যে প্রধানগঙ্গা ওব্রহ্মপুত্র। উভয়েইবঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে।[৬৭] গঙ্গার প্রধান উপনদীগুলি হলযমুনা ও কোশী নদী। কোশী নদীতে নাব্যতা অত্যন্ত কম থাকায় প্রতি বছর ভয়াল বন্যা দেখা দেয়। উপদ্বীপের প্রধান নদীগুলি হলগোদাবরী,মহানদী,কৃষ্ণা, ওকাবেরী। এই নদীগুলির খাত অত্যন্ত নাব্য হওয়ায় বন্যা কম হয়ে থাকে। এই নদীগুলিও বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে।[৬৮] অন্যদিকেনর্মদা ওতাপ্তি পতিত হয়েছে আরব সাগরে।[৬৯] ভারতীয় উপকূলভূমির অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হল পশ্চিম ভারতে কচ্ছের রাণ ও পূর্বভারতেসুন্দরবনের পলিগঠিত বদ্বীপ অঞ্চল, যা ভারত ও বাংলাদেশে বিস্তৃত।[৭০] ভারতে দুটি দ্বীপপুঞ্জ দেখা যায়: ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলভাগের নিকটে প্রবালদ্বীপলাক্ষাদ্বীপ এবংআন্দামান সাগরের আগ্নেয় দ্বীপমালাআন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ।[৭১]
ভারতের বৈচিত্র্যময়ভৌগোলিক ওভূতাত্ত্বিক উপাদানগুলি দেশেরজলবায়ুকে অনেকাংশেই প্রভাবিত করে। কর্কটক্রান্তি রেখা ভারতের মাঝবরাবর প্রসারিত। কিন্তু দেশের উত্তর সীমান্ত বরাবর অবস্থিতহিমালয় পর্বতমালা মধ্য এশিয়া থেকে আগত ক্যাটাবেটিক বায়ুপ্রবাহকে প্রতিরোধ করে দেশে ক্রান্তীয় জলবায়ু বজায় রাখতে সহায়তা করে।[৭২][৭৩]হিমালয় পর্বতমালা ওথর মরুভূমি দেশেমৌসুমি বায়ুপ্রবাহকেও নিয়ন্ত্রণ করে।[৭৪] থর মরুভূমি গ্রীষ্মকালীন আর্দ্র দক্ষিণ-পূর্ব মৌসুমি বায়ুকে আকর্ষণ করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। জুন থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যবর্তী সময়ে আগত এই বায়ুপ্রবাহই ভারতে বর্ষার মূল কারণ।[৭৪] ভারতে চারটি প্রধান ঋতু দেখা যায়:শীত (জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি),গ্রীষ্ম (মার্চ থেকে মে),বর্ষা (জুন থেকে সেপ্টেম্বর), এবংশরৎ ওহেমন্ত (অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর)।
ক্রান্তীয় জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য অনুসারে বর্ষা ও অন্যান্য আবহাওয়াগত পরিস্থিতি দেশে খরা, বন্যা, সাইক্লোন ও অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জন্য দায়ী। এর ফলে প্রতি বছর দেশটির লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু ও সম্পত্তি হানি হয়। বর্তমানে বৈশ্বিক উষ্ণায়ণের ফলে ভারতের জলবায়ুতে নানাপ্রকার অস্থিরতা দেখা দিচ্ছে।
ইন্দোমালয় পরিবেশক্ষেত্রে অবস্থিত ভারত জীববৈচিত্র্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন। ১৮টি মহাবৈচিত্র্যপূর্ণ রাষ্ট্রের একটি এই দেশ পৃথিবীর ৭.৬% স্তন্যপায়ী, ১২.৬% পাখি, ৬.২% সরীসৃপ, ৪.৪% উভচর, ১১.৭% মাছ ও ৬.০% সপুষ্পক উদ্ভিদের বাসস্থান।[৭৫] পশ্চিমঘাট পর্বতমালার শোলা বর্ষণারণ্যের মতো ভারতের অনেক অঞ্চলেই স্বাভাবিক উদ্ভিদের প্রাচুর্য দেখা যায়। ৩৩% ভারতীয় বৃক্ষপ্রজাতি স্বাভাবিক উদ্ভিদশ্রেণীর অন্তর্গত।[৭৬][৭৭] ভারতের প্রধান অরণ্যক্ষেত্রগুলিআন্দামান দ্বীপপুঞ্জ,পশ্চিমঘাট পর্বতমালা ওউত্তর-পূর্ব ভারতের বিষুবীয় বর্ষণারণ্য থেকে হিমালয়ের চিরহরিৎ অরণ্যক্ষেত্র পর্যন্ত বিস্তৃত। এছাড়া পূর্ব ভারতেরশাল-অধ্যুষিত, মধ্য ও দক্ষিণ ভারতের টিক-অধ্যুষিত ও মধ্য দাক্ষিণাত্য ও গাঙ্গেয় সমভূমির বাবুল অধ্যুষিত বনাঞ্চলও উল্লেখযোগ্য।[৭৮] গ্রামীণ ভারতে নিম গাছ ওষধি রূপে ব্যবহৃত হয়। পিপল গাছমহেঞ্জোদাড়োর প্রতীকচিহ্নে দেখা গেছে। এই গাছের তলাতেইগৌতম বুদ্ধ সিদ্ধি বা বোধিলাভ করেছিলেন ও তার নাম হয়েছিল 'গৌতম বুদ্ধ'। তাই বু্দ্ধগয়ায় অবস্থিত ওই বৃক্ষটিকে বলা হয় 'বোধিবৃক্ষ'।
বহু ভারতীয় প্রজাতি গন্ডোয়ানায় জাত টেক্সা থেকে উদ্ভূত।উপদ্বীপীয় ভারতের ক্রমসরণ ও ইউরেশীয় ভূমিভাগের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে প্রজাতিগুলির মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দেয়। যদিও অগ্ন্যুৎপাত ও অন্যান্য জলবায়ুগত পরিবর্তনের কারণে বিগত ২ কোটি বছরে বহু দেশজ প্রজাতিই অবলুপ্ত হয়ে যায়।[৭৯] এর ঠিক পরেই দুটি প্রাণীভৌগোলিক পথে উত্থানশীল হিমালয়ের দুই পাশ দিয়ে ভারতে স্তন্যপায়ী প্রাণীরা প্রবেশ করে।[৭৮] প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভারতের মোট স্তন্যপায়ী ও পাখিদের যথাক্রমে মাত্র ১২.৬% ও ৪.৫% দেশজ; যেখানে দেশের সরীসৃপ ও উভচরদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা যথাক্রমে ৪৫.৮% ও ৫৫.৮%।[৭৫] উল্লেখযোগ্য দেশীয় প্রাণী হলনীলগিরি লেঙ্গুর, পশ্চিমঘাট পর্বতমালার বাদামি ও গাঢ় লাল রঙের বেডোমি ব্যাঙ। ভারত ১৭২টি (২.৯%)প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন-গণিত লুপ্তপ্রায় প্রাণীর আবাসস্থল।[৮০] এর মধ্যে রয়েছেএশীয় সিংহ,বাংলা বাঘ, ভারতীয় শ্বেতপৃষ্ঠ শকুন (বর্তমানে প্রায় বিলুপ্ত)।
বিগত দশকগুলিতে মানুষের অরণ্য আগ্রাসন বন্যপ্রাণী অবলুপ্তির অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ফলে ১৯৩৫ সালে চালু হওয়াজাতীয় উদ্যান ও সংরক্ষিত স্থানের ব্যবস্থাটিকে ব্যাপ্ত করা হয়। ১৯৭২ সালে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন[৮১] ও বাঘ সংরক্ষণের জন্যব্যাঘ্র প্রকল্প চালু হয়। এর সঙ্গে ১৯৮০ সালে প্রবর্তিত হয় অরণ্য সংরক্ষণ আইন[৮২] ভারতে অভয়ারণ্যের সংখ্যা পাঁচশোর অধিক। সঙ্গে দেশে ১৩টি জৈবক্ষেত্র সংরক্ষণও করা হয়।[৮৩] এর মধ্যে চারটি বিশ্ব জৈবক্ষেত্র সংরক্ষণ নেটওয়ার্কের অন্তর্গত। রামসর কনভেনশন অনুসারে ভারতে পঁচিশটি জলাভূমি আছে; যার একটিকলকাতা মহানগরীরপূর্বভাগে অবস্থিত।[৮৪]
ভারতীয় প্রজাতন্ত্র বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র।[৮৫][৮৬] স্বাধীনোত্তর কালে অধিকাংশ সময় জুড়েই এদেশের শাসনকর্তৃত্বভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের আওতাধীন।[৮৭] অন্যদিকে ভারতের রাজ্য-রাজনীতিতে প্রাধান্য বিস্তার করেছেভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (সংক্ষেপে "কংগ্রেস"),ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি),ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) (সিপিআই(এম)) প্রভৃতি জাতীয় দল ও একাধিক আঞ্চলিক পার্টি। দুটি সংক্ষিপ্ত পর্যায় বাদে ১৯৫০ সাল থেকে ১৯৯০ সাল অবধি জাতীয় কংগ্রেস সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের মর্যাদা ভোগ করেছে। প্রধানমন্ত্রীইন্দিরা গান্ধী ঘোষিতজরুরি অবস্থা-জনিত গণঅসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে ১৯৭৭ থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যবর্তী সময়ে কংগ্রেসকে ক্ষমতাচ্যুত করেজনতা পার্টি সরকার গঠন করে। ১৯৮৯ সালে জনতা দলের নেতৃত্বে জাতীয় ফ্রন্টবামফ্রন্টের সহযোগিতায় নির্বাচনে জয়লাভ করে দু-বছর ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকে।[৮৮] ১৯৯১ সালে কোনও পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ না করতে পারায় কংগ্রেসপি ভি নরসিমা রাওয়ের প্রধানমন্ত্রিত্বে একটি সংখ্যালঘু সরকার গঠন করে। এই সরকার অবশ্য পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতায় টিকে থাকতে সক্ষম হয়।[৮৯]
১৯৯৬-১৯৯৮ সালটি কেন্দ্রীয় সরকারের অস্থিরতার যুগ। এই সময় একাধিক স্বল্পকালীন জোট কেন্দ্রে সরকার গঠন করে। ১৯৯৬ সালে সংক্ষিপ্ত সময়কালের জন্য বিজেপি সরকার গঠন করে। তারপর কংগ্রেস ও বিজেপি-বিরোধী যুক্তফ্রন্ট ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৮ সালে বিজেপির নেতৃত্বে জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ) ক্ষমতা দখল করে। এই সরকারই ভারতের প্রথম পূর্ণ সময়কালের অকংগ্রেসি সরকার।[৯০] ২০০৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীনসংযুক্ত প্রগতিশীল জোট (ইউপিএ) লোকসভায় বিপুল সংখ্যক আসনে জয়লাভ করেছিল এবং বিজেপি-বিরোধী বাম সাংসদদের সহায়তায় সরকার গঠন করেছিল। ইউপিএ ২০০৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে পুনরায় ক্ষমতায় এসেছিল। তবে বামদলগুলি আর এই জোটের সমর্থক নয়।[৯১]
২০১৪-এ বিজেপি-র নেতৃত্বেজাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ) পুনরায় কেন্দ্রীয় ক্ষমতায় এসেছে এবং এর ফলেনরেন্দ্র মোদী ভারতের চতুর্দশ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন।[৯২] ২০১৯ সালে মোদী দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নির্বাচিত হন।[৯৩]
১৯৫০ সালের২৬ জানুয়ারি প্রবর্তিতভারতীয় সংবিধান বিশ্বের বৃহত্তম ও সর্বাধিক বিস্তারিত ব্যাখ্যাসমৃদ্ধ সংবিধান।[৯৪] সংবিধানেরপ্রস্তাবনা অংশে ভারতীয় প্রজাতন্ত্রকে একটিসার্বভৌম,সমাজতান্ত্রিক,ধর্মনিরপেক্ষ,গণতান্ত্রিকসাধারণতন্ত্র রূপে বর্ণিত হয়েছে।[৯৫] ভারতে প্রচলিত দ্বিকক্ষবিশিষ্টসংসদ ওয়েস্টমিনিস্টার-ধাঁচের একটি সংসদ ব্যবস্থা। এদেশের সরকার প্রথাগতভাবে ‘আধা-যুক্তরাষ্ট্রীয়’ সরকার ব্যবস্থা হিসাবে বর্ণিত হয়; যার বৈশিষ্ট্য হল একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীয় সরকার ও অপেক্ষাকৃত দুর্বল একাধিক রাজ্য সরকারের সহাবস্থান।[৯৬] যদিও ১৯৯০-এর দশকের শেষভাগ থেকে রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক সংস্কার ও পরিবর্তনের ফলে রাজ্য সরকারগুলির ক্ষমতার ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি দেশকে চালিত করছে একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার দিকে।[৯৭]
রাষ্ট্রপতি হলেন ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান।[৯৮] তিনি পরোক্ষভাবে একটি নির্বাচক মণ্ডলী কর্তৃক পাঁচ বছরের সময়কালের ব্যবধানে[৯৯][১০০] নির্বাচিত হন।[১০১] অন্যদিকে ভারতের সরকার প্রধান হলেনপ্রধানমন্ত্রী। অধিকাংশ শাসনক্ষমতা ন্যস্ত থাকে তার হাতেই।[৯৮]রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত[১০২] প্রধানমন্ত্রীকে প্রথাগতভাবে সংসদের নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ট আসনপ্রাপ্ত রাজনৈতিক দল বা জোটের সমর্থন লাভ করতে হয়[৯৮]। রাষ্ট্রপতি,উপরাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রী পরিষদ (যার কার্যনির্বাহী সমিতি হল ক্যাবিনেট)—এই নিয়ে গঠিত ভারতের শাসনবিভাগ। দপ্তরযুক্ত মন্ত্রীদের সকলকেই সংসদের কোনও না কোনও কক্ষের সদস্য হতে হয়। ভারতীয় সংসদীয় ব্যবস্থায় শাসনবিভাগ আইনবিভাগের অধস্তন। সেই কারণে প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রী পরিষদকেসংসদের নিম্নকক্ষের কাছে দায়বদ্ধ থাকতে হয়।[১০৩]
ভারতের আইনবিভাগ হল দ্বিকক্ষবিশিষ্টসংসদ। এটি গঠিত হয়েছেরাজ্যসভা নামক একটি উচ্চকক্ষ ওলোকসভা নামক একটি নিম্নকক্ষ নিয়ে।[১০৪] রাজ্যসভার সদস্যসংখ্যা ২৪৫; এঁদের দপ্তরকাল ছয় বছর।[১০৫] এঁদের অধিকাংশইরাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির বিধানসভা থেকে রাজ্যের জনসংখ্যার ভিত্তিতে পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হয়ে আসেন।[১০৫] অন্যদিকে লোকসভার ৫৪৫ জন সদস্যের মধ্যে ৫৪৩ জন পাঁচ বছরের মেয়াদে নিজ নিজ নির্বাচন কেন্দ্র থেকে প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন।[১০৫] এছাড়া রাষ্ট্রপতি যদি মনে করেন যে সংসদেইঙ্গ-ভারতীয় সম্প্রদায় এর যথেষ্ট সংখ্যক প্রতিনিধি নেই, তবে তিনি দুই জন সদস্যকে উক্ত সম্প্রদায় থেকে সাংসদ মনোনীত করতে পারেন।[১০৫]
ভারতে এককেন্দ্রিক ত্রি-স্তর বিচারব্যবস্থা প্রচলিত। এই বিচারব্যবস্থাপ্রধান বিচারপতির নেতৃত্বেসর্বোচ্চ আদালত, ২১টিউচ্চ আদালত ও অসংখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতের সমন্বয়ে গঠিত।[১০৬]মৌলিক অধিকার, কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে বিবাদ ও উচ্চ আদালতের আপিল বিচার এক্তিয়ার সংক্রান্ত মামলাগুলির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদালতের মূল বিচার এক্তিয়ারের অন্তর্গত।[১০৭] এই বিচারব্যবস্থা স্বতন্ত্র[১০৬] এবং আইন ঘোষণা এবং সংবিধান-বিরোধী কেন্দ্রীয় বা রাজ্য আইন প্রতিহত করার ক্ষমতাযুক্ত।[১০৮] সংবিধানের অভিভাবকত্ব ও ব্যাখ্যাদান সুপ্রিম কোর্টের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার অন্তর্গত।[১০৯]
ভারত২৮টি রাজ্য ও ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলবিশিষ্ট একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় সাধারণতন্ত্র। ভারতে প্রত্যেক রাজ্যে নির্বাচিত রাজ্য সরকার অধিষ্ঠিত রয়েছে;পুদুচেরি ওদিল্লি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলেও নির্বাচিত সরকার রয়েছে। অপর পাঁচটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল রাষ্ট্রপতির প্রত্যক্ষ শাসনাধীন; এই অঞ্চলগুলিতে কেন্দ্রীয় সরকার উপরাজ্যপাল বা প্রশাসক নিয়োগ করে থাকেন। ১৯৫৬ সালেরাজ্য পুনর্গঠন আইন বলে ভাষার ভিত্তিতে রাজ্যগুলি স্থাপিত হয়।[১১০] তারপর থেকে এই কাঠামোটি মোটামুটি অপরিবর্তিত রয়েছে। গ্রাসরুট স্তরে শাসন ও প্রশাসন পরিচালনার লক্ষ্যে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি মোট৭৩৯টি জেলায় বিভক্ত।[১১১] জেলাগুলি আবারতহশিল, তালুক বা মহকুমায় বিভক্ত, যা আবারপৌরসভা ওপঞ্চায়েতে বিভক্ত।
ভারতের ২৮টি রাজ্য এবং ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের একটি ক্লিকযোগ্য মানচিত্র
১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর থেকেই বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আন্তরিক। ১৯৫০-এর দশকে ভারতআফ্রিকা ওএশিয়ার ইউরোপীয় উপনিবেশগুলির স্বাধীনতার স্বপক্ষে সওয়াল করে।[১১২]শ্রীলঙ্কায় ভারতীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণ ওমালদ্বীপে অপারেশন ক্যাকটাস—এই দুই ক্ষেত্রে ভারত তার প্রতিবেশী রাষ্ট্রে সামরিক মধ্যস্থতায় অংশ নেয়।কমনওয়েলথের এক সদস্য ভারত,জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনেরও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।[১১৩] ভারত-চীন যুদ্ধ ও ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের পরসোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আন্তরিক হয়ে ওঠে। ফলেযুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতি হয়।ঠান্ডা যুদ্ধের সমাপ্তি পর্যন্ত সেই সম্পর্ক একই রকম থাকে।কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের তিনটি যুদ্ধ হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতীয় মিত্র বাহিনী বাংলাদেশকে সহায়তা করে।[১১৪] এছাড়াও ১৯৮৪ সালেসিয়াচেন হিমবাহ ও ১৯৯৯ সালেকার্গিলকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
ড.অমর্ত্য সেন, নোবেলজয়ী ভারতীয় অর্থনীতিবিদ তথা জনকল্যাণ অর্থনীতির প্রবক্তা
১৯৫০-এর দশক থেকে ১৯৮০-এর দশক পর্যন্ত ভারতসমাজতান্ত্রিক-ধাঁচের অর্থনৈতিক নীতি অনুসরণ করে চলে।স্বাধীনতা-উত্তর যুগের অধিকাংশ সময় জুড়ে ভারতে যে আধা-যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল, তাতে বেসরকারি উদ্যোগ, বৈদেশিক বাণিজ্য ও প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ওপর কঠোর সরকারি বিধিনিষেধ আরোপিত থাকত। ১৯৯১ সালেঅর্থনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে ভারত তার বাজার উন্মুক্ত করে দেয়। বিদেশি বাণিজ্য ও বিনিয়োগের উপর সরকারি কর্তৃত্ব শিথিল করা হয়।[৫৮] এর ধনাত্মক প্রভাবে মার্চ ১৯৯১ সালে ৫.৮ বিলিয়নমার্কিন ডলার থেকে বৈদেশিক মুদ্রা সঞ্চয় ৪ জুলাই, ২০০৮ তারিখে বেড়ে দাঁড়ায় ৩০৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে।[১২১] ঘাটতি কমে আসে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য বাজেটগুলিতে।[১২২] যদিও সরকারি মালিকানাধীন সংস্থাগুলির বেসরকারিকরণ এবং কোনও কোনও সরকারি খাত বেসরকারি ও বৈদেশিক অংশীদারদের নিকট মুক্ত করে দেওয়ায় রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি হয়।[১২৩][১২৪]
ভারতের মোটস্থুল অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপি $১.২৪৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার[১২৫] যাক্রয়ক্ষমতা সমতার (পিপিপি) পরিমাপে $৪.৭২৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমতূল্য। জিডিপি'র মানদণ্ডে ভারত বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি। চলতি মূল্যে ভারতেরমাথাপিছু আয় $৯৭৭ মার্কিন ডলার (বিশ্বে ১২৮তম) যাক্রয়ক্ষমতা সমতা (পিপিপি) ভিত্তিক পরিমাপে $২,৭০০ মার্কিন ডলারের সমতূল্য (বিশ্বে ১১৮তম)। বিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগে কৃষি প্রধান দেশ হিসাবে পরিচিত ভারতের বর্তমান জিডিপিতে পরিষেবা খাতের অবদান ৫৪ শতাংশ; ইতোমধ্যে কৃষিখাতের অবদান হ্রাস পেয়ে ২৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে এবং শিল্পখাতের অবদান মাত্র ১৮ শতাংশ। বিগত দুই দশকে বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি ভারতের গড় বার্ষিক জিডিপি বৃদ্ধির হার ছিল ৫.৭ শতাংশ।[১২৬]
৫১ কোটি ৬৩ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত ভারত পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমশক্তির দেশ। এই শক্তির ৬০ শতাংশ নিয়োজিত কৃষিখাতে ও কৃষিসংক্রান্ত শিল্পগুলিতে, ২৮ শতাংশ পরিষেবা ও পরিষেবা-সংক্রান্ত শিল্পে এবং ১২ শতাংশ নিযুক্ত শিল্পখাতে।[৫৬] প্রধান কৃষিজ ফসলগুলি হলধান,গম, তৈলবীজ, তুলা,পাট,চা,আখ ওআলু। প্রধান শিল্পগুলি হল অটোমোবাইল, সিমেন্ট, রাসায়নিক, বৈদ্যুতিন ভোগ্যপণ্য, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, যন্ত্রশিল্প, খনি, পেট্রোলিয়াম, ভেষজ, ইস্পাত, পরিবহন উপকরণ ও বস্ত্রশিল্প। ভারতের প্রাকৃতিক সম্পদগুলি হল আবাদি জমি, বক্সাইট, ক্রোমাইট,কয়লা,হীরক, আকরিক লোহা,চুনাপাথর,ম্যাঙ্গানিজ,অভ্র,প্রাকৃতিক গ্যাস,খনিজ তেল ওটাইটানিয়াম আকরিক।[৮৭] ভারতের দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শক্তির চাহিদাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মতে, ভারত খনিজ তেলজাত পণ্যের ষষ্ঠ বৃহত্তম ও কয়লার তৃতীয় বৃহত্তম ভোক্তা।[১২৭]
বিগত দুই দশকের উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও ভারত বিশ্বের সর্বাপেক্ষা দারিদ্র্যপীড়িত রাষ্ট্র। শিশু-অপুষ্টির হারও বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলির তুলনায় ভারতে সর্বাধিক: ২০০৭ সালের হিসেব অনুযায়ী ৪৬ শতাংশ)।[১২৮][১২৯][হালনাগাদ প্রয়োজন] তবে বিশ্বব্যাঙ্ক নির্ধারিত দৈনিক ১.২৫ মার্কিন ডলারের আন্তর্জাতিক দারিদ্র্যরেখার (২০০৪ সালের হিসেব অনুযায়ী,ক্রয়ক্ষমতা সমতা নামমাত্র হিসেবে নগরাঞ্চলে দৈনিক ২১.৬ টাকা ও গ্রামাঞ্চলে দৈনিক ১৪.৩ টাকা) নিচে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা ১৯৮১ সালে ৬০ শতাংশ থেকে ২০০৫ সালে ৪২ শতাংশে নেমে এসেছে।[১৩০] সাম্প্রতিক দশকগুলিতে ভারত মন্বন্তর প্রতিরোধ করতে পারলেও, দেশের অর্ধেক শিশু ওজন ঘাটতিতে ভুগছে। এই হার সারা বিশ্বের নিরিখে কেবল উচ্চই নয়, এমনকী সাব-সাহারান আফ্রিকার হারের প্রায় দ্বিগুণ।[১৩১][হালনাগাদ প্রয়োজন]
সাম্প্রতিককালে, ভারতের বহুসংখ্যক শিক্ষিতইংরেজি-পটু প্রশিক্ষিত পেশাদারগণ বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থা, মেডিক্যাল পর্যটন ও বিজ্ঞাপনের কাজে নিযুক্ত হয়েছেন।[১৩২] বর্তমানে ভারতসফটওয়্যার ও অর্থসংক্রান্ত, গবেষণাসংক্রান্ত ও প্রকৌশলগত পরিষেবার এক বৃহৎ রপ্তানিকারক।
২০০৭ সালে রফতানি ও আমদানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে $১৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ও $২১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।[১৩৩] বস্ত্র, রত্ন, ইঞ্জিনিয়ারিং দ্রব্যাদি ও সফটওয়্যার ভারতের প্রধান রপ্তানি পণ্য। প্রধান প্রধান আমদানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে অপরিশোধিততেল, যন্ত্রপাতি,সার ও রাসায়নিক দ্রব্য। ভারতের প্রধানতম বাণিজ্য সহযোগী হলমার্কিন যুক্তরাষ্ট্র,ইউরোপীয় ইউনিয়ন ওচীন। ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সদরদপ্তর দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী নামে খ্যাতমুম্বই মহানগরীতে অবস্থিত।
ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল রাষ্ট্র। ২০১৮ সালে দেশটির আনুমানিক জনসংখ্যা প্রায় ১৩৫ কোটি। ভারতের জনসংখ্যা পৃথিবীর মোট জন সংখ্যার প্রায় ১৭.৭৪ শতাংশ। সাম্প্রতিক কালে বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার প্রতি হাজার জনে ১১.১০ জন বা ১.১১ শতাংশ। গড়ে প্রতি দুই সেকেন্ডে জনসংখ্যা একজন করে বাড়ে। যদিও সাম্প্রতিক দশকগুলিতে গ্রাম থেকে শহরে অভিবাসনের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় ভারতে শহরাঞ্চলীয় জনসংখ্যা বহুল পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে, তথাপি প্রায় ৬৬.৮০ শতাংশ ভারতবাসী গ্রামাঞ্চলে বাস করেন। জনসংখ্যার ৩৩.২০ শতাংশ শহরে বসবাস করে। এ দেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনবসতি ৪৫৫ জন।[১৩৪] ভারতের বৃহত্তম মহানগরগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলমুম্বই (পূর্বনাম বম্বে বা বোম্বাই),নয়াদিল্লি,বেঙ্গালুরু (পূর্বনাম ব্যাঙ্গালোর),কলকাতা,হায়দ্রাবাদ ওআহমেদাবাদ।[৮৭]
২০১৩-১৫ কালপর্বে জাতীয় পর্যায়ে লিঙ্গানুপাত প্রতি হাজার পুরুষের বিপরীতে ৯০০ জন নারী।[১৩৫] ২০১১-এর জনমিতি অনুযায়ী ভারতে সাক্ষরতার হার ৭৪.০৪ শতাংশ, যা পুরুষদের মধ্যে ৮২.১৪ শতাংশ এবং নারীদের মধ্যে ৬৫.৪৬ শতাংশ। সাক্ষরতার সর্বনিম্ন হারবিহার রাজ্যে: ৬৩.৮২ শতাংশ।[১৩৬] শহর-গ্রাম স্বাক্ষরতার পার্থক্য ২০০১ সালে ছিল ২১.২ শতাংশ, যা ২০১১ সালে নেমে আসে ১৬.১ শতাংশে। গ্রামীণ অঞ্চলগুলোতে স্বাক্ষরতা বৃদ্ধির হার শহর এলাকার তুলনায় দ্বিগুণ।[১৩৭] সাক্ষরতার হার সর্বাধিককেরল রাজ্যে (৯১%)।[১৩৮]
ভাষা
ভারতের দুটি প্রধান ভাষাগোষ্ঠী হলইন্দো-আর্য (মোট জনসংখ্যার ৭৪%) ওদ্রাবিড় (মোট জনসংখ্যার ২৪%)। অপরাপর ভাষাগোষ্ঠীগুলি হলঅস্ট্রো-এশিয়াটিক ওতিব্বতি-বর্মী ভাষাগোষ্ঠী। ভারতের বৃহত্তম জনগোষ্ঠীয় ভাষাহিন্দি[১৩৯] যা কি-না কেন্দ্রীয় সরকারের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে নির্ধারিত।[১৪০] "সহকারী সরকারি ভাষা"ইংরেজি প্রশাসন ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে বহুল ব্যবহৃত।[১৪১] উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও ইংরেজির প্রাধান্য প্রশ্নাতীত। ভারতের সংবিধানবাংলা-সহ২২টি ভাষাকে সরকারি ভাষার মর্যাদা দিয়েছে। এগুলি হয় প্রচলিত, নয় ধ্রুপদি ভাষা। প্রাচীনকাল থেকেই ভারতে ধ্রুপদি ভাষার মর্যাদা পেয়ে আসাতামিল ওসংস্কৃত[১৪২] এবংকন্নড় ওতেলুগু ভাষাকে ভারত সরকার নিজস্ব একটি যোগ্যতাসূচকবলে ধ্রুপদি ভাষার মর্যাদা দান করেছে।[১৪৩] ভারতে উপ-ভাষার সংখ্যা ১,৬৫২টি।[১৪৪]
১১০ কোটিরও বেশি (৭৯.৮%) ভারতবাসীহিন্দু, যদিও হিন্দু বলতে সিন্ধু নদের অববাহিকায় বসবাসরত সকলকেই বোঝায়। অন্যান্য ধর্মসম্প্রদায়গুলোর মধ্যে রয়েছেমুসলমান (১৪.২%),খ্রিস্টান (২.৩%),শিখ (১.৭%),বৌদ্ধ (০.৭%),জৈন (০.৪%), বাকি (০.৯%)ইহুদি,পারসি ওবাহাই, আদিবাসী ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী মানুষ।[১৪৫][১৪৬] উল্লেখ্য, ভারতে বিশ্বের বৃহত্তম হিন্দু, শিখ, জৈন, জরাথ্রুষ্টবাদী ও বাহাই ধর্মাবলম্বী জনসংখ্যা রয়েছে এবং ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা সমগ্র বিশ্বের নিরিখে তৃতীয়-বৃহত্তম এবং অ-মুসলমান প্রধান দেশগুলোর মধ্যে বৃহত্তম। দেশে আদিবাসী জনসংখ্যা ৮.১%, যার মধ্যে ৯৮% আদিবাসীরা হিন্দুধর্ম পালন করে থাকে।[১৪৭][১৪৮][১৪৯]
আফ্রিকা মহাদেশের পরেই ভারত সংস্কৃতি, ভাষা ও জাতিগতভাবে বিশ্বে সর্বাধিক বৈচিত্র্যপূর্ণ ভৌগোলিক অঞ্চল।[৮৭] "সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের[১৫১] মধ্যে ঐক্য"[১৫২] ভারতীয় সংস্কৃতির প্রধান বৈশিষ্ট্য। এই সংস্কৃতি স্বকীয় ঐতিহ্য রক্ষার পাশাপাশি বৈদেশিক আক্রমণকারী ও বহিরাগত জাতিগুলির থেকে গ্রহণ করা রীতিনীতির সমন্বয়, সংস্কৃতি ,ঐতিহ্য ও ধারণা অঙ্গীভূত হয়ে এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলের সংস্কৃতির ওপর নিজের প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে।
স্থাপত্য
ভারতীয় স্থাপত্য এমন একটি বিষয় যার মধ্যে ভারতীয় সংস্কৃতির এই বৈচিত্র্যময় রূপটি ধরা পড়ে।তাজমহল ও অন্যান্যমুঘল স্থাপত্য নিদর্শন তথা দ্রাবিড় স্থাপত্য নিদর্শনগুলির মধ্যে ভারত ও বহির্ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রাচীন ও স্থানীয় ঐতিহ্যের সম্মিলন লক্ষ করা যায়। ভারতের স্থানীয় স্থাপত্যশৈলিগুলিও দেশের এক-একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক স্থাপত্য-বৈচিত্র্যের সাক্ষী।
পরিবেশন শিল্পকলা
ভারতীয় সঙ্গীতের জগৎটি গঠিত হয়েছে ধ্রুপদি ও আঞ্চলিক সঙ্গীত ধারার সংমিশ্রণে।ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত দুটি ধারায় বিভক্ত – উত্তর ভারতের হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত এবং দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটকী সঙ্গীত। এই দুই প্রধান সঙ্গীত ধারা থেকে আবার উৎসারিত হয়েছে অনেক উপধারা। আঞ্চলিক জনপ্রিয় সঙ্গীতের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরবীন্দ্রসঙ্গীত, হিন্দি ফিল্মি গান ও ইন্ডি-পপ এবংবাউল ও অন্যান্য বিভিন্ন প্রকার লোকসঙ্গীত।
ভারতের প্রাচীনতমসাহিত্য প্রথমে মৌখিকভাবে ও পরে লিখিত আকারে প্রচলিত হয়।[১৬১] এই রচনাগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্যবেদ, ভারতীয় মহাকাব্যরামায়ণ ওমহাভারত, নাটকঅভিজ্ঞানশকুন্তলম্ ইত্যাদিসংস্কৃত সাহিত্যের ধ্রুপদী কীর্তিসমূহ[১৬২] এবংতামিলে রচিতসঙ্গম সাহিত্য।[১৬৩] আধুনিক কালের ভারতীয় সাহিত্যিকদের মধ্যে সর্বাগ্রগণ্য হলেন ১৯১৩ সালে দেশের প্রথমসাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী কবিরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এছাড়াও ইংরেজি ভাষায় সাহিত্যরচনার জন্য ভারতীয় অথবা ভারতীয় বংশোদ্ভুত যেসকল লেখকগণ সারা বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করেছেন তারা হলেনঅমিতাভ ঘোষ, সালমান রুসদি, মার্কিন-প্রবাসী বাঙালি সাহিত্যিকঝুম্পা লাহিড়ী, নোবেলজয়ী ব্রিটিশ-ভারতীয় সাহিত্যিকভি এস নাইপল প্রমুখ।
ভারতীয় রন্ধনশৈলীর বিশেষত্ব হল বিভিন্ন বৈচিত্র্যপূর্ণ আঞ্চলিক রন্ধনপ্রণালী এবং ভেষজ ও মশলার অভিজাত প্রয়োগ। দেশের প্রধান খাদ্যভাত (পূর্ব ও দক্ষিণ ভারতে) ওরুটি (মূলত উত্তর ভারতে)।[১৭৬]
পোশাক
ভারতে পোশাকের ঐতিহ্য রং, ধরন ও জলবায়ুর মতো বিভিন্ন কারণে অঞ্চলভেদে ভিন্ন ভিন্ন। থানকাপড়ের পোশাক হিসাবে মহিলাদের ক্ষেত্রেশাড়ি ও পুরুষদের ক্ষেত্রেধুতি বালুঙ্গি বিশেষ জনপ্রিয়। এছাড়া সেলাই-করা পোশাকের মধ্যে মহিলাদেরসালোয়ার-কামিজ ও পুরুষদের কুর্তা-পাজামা বা ইউরোপীয়-ধাঁচেট্রাউজার্স ওশার্ট বিশেষভাবে প্রচলিত।
ভারতে সনাতন পারিবারিক মূল্য বিশেষ সম্মানের অধিকারী। একাধিক প্রজন্মের মিলনক্ষেত্র পিতৃতান্ত্রিক যৌথ পরিবারগুলিই ভারতীয় পরিবারতন্ত্রের আদর্শ বলে বিবেচিত হয়। যদিও আজকাল নগরাঞ্চলগুলিতে ছোটো ছোটো নিউক্লিয়ার পরিবারের উদ্ভব ঘটতে দেখা যায়।[১৭৮] ভারতে বিবাহ আয়োজিত হয় পাত্র ও পাত্রীর পিতামাতা ও অন্যান্য গুরুজনস্থানীয় আত্মীয়বর্গের সম্মতিক্রমে। আয়োজিত বিবাহ ভারতে এক অতিমাত্রায় লক্ষিত বিবাহরীতি।[১৭৯] বিবাহবন্ধন সারাজীবনের বন্ধন বলে বিবেচিত হয়।[১৭৯] তাই এদেশে বিবাহবিচ্ছেদের হারও অত্যন্ত কম।[১৮০] ভারতে বাল্যবিবাহ প্রথা আজও প্রচলিত যদিও বাল্যবিবাহের হার ক্রমহাসমান। ইউনিসেফের স্যাম্পেল সার্ভে এবং ভারতের জনগণনা অনুযায়ী ২০০৬-এ যেখানে ৪৭% নারীর বিবাহ হত ১৮ বছর বয়সের আগে, ২০১৬ সালে সেই স্ংখ্যা ২৭%।[১৮১][১৮২]
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিক্ষেত্রে অতি প্রাচীন কাল থেকেই ভারত তার নিজস্ব স্বাক্ষর রেখে এসেছে। খ্রিষ্টীয় তৃতীয় শতকে ভারতীয় ধাতুবিদগণদিল্লির লৌহস্তম্ভটি নির্মাণ করেন।বেদাঙ্গ জ্যোতিষ গ্রন্থে সেযুগের মহাকাশ পর্যবেক্ষণের বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায়।কোপারনিকাসেরসূর্যকেন্দ্রিকতাবাদ প্রস্তাবনার ১০০০ বছর আগেই ভারতীয় গণিতবিদ তথা জ্যোতির্বিদআর্যভট্ট প্রাচীন বিশ্বধারণার ভ্রান্ততা প্রমাণ করেছিলেন। প্রাচীন বিশ্বে একমাত্র ভারতেই গড়ে উঠেছিল হীরের খনি। ভারতীয় গণিতজ্ঞশ্রীনিবাস রামানুজন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ গণিতবিদদের অন্যতম বলে বিবেচিত হন। ১৯২৮ সালে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন ভারতীয় পদার্থবিদচন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন।
ইনফোসিস,বেঙ্গালুরু। বেঙ্গালুরু ভারতের তথ্য প্রযুক্তির রাজধানী হিসাবে পরিচিত।
স্বাধীনোত্তর ভারতকে একটি দরিদ্র রাষ্ট্র বলে বিবেচনা করা হলেও, স্বাধীনতা অর্জনের পাঁচ দশকের মধ্যেই এই দেশ প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষিণ এশিয়ার এক মহাশক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত হয়। সাক্ষরতার হার ও কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি এবং নগরকেন্দ্রের উদ্ভব ভারতের এই প্রযুক্তিগত উত্থানের কারণ। ১৯৭৫ সালে প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহআর্যভট্টের উৎক্ষেপণ, তার পূর্ববর্তী বছরেস্মাইলিং বুদ্ধ নামে এক ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক পরীক্ষণ, দূরসংযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, পারমাণবিক চুল্লি ওহোমি জাহাঙ্গীর ভাভা পরিচালিতভাভা পরমাণু অনুসন্ধান কেন্দ্রের মতো গবেষণা কেন্দ্রের বিকাশ ভারতের উল্লেখযোগ্য বৈজ্ঞানিক সাফল্য বলে বিবেচিত হয়।[১৮৩] লো-আর্থ, মেরু ও জিওস্টেশনারি কক্ষপথে উপগ্রহ উৎক্ষেপণের এক দেশীয় প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে ভারত। এএসএলভি, পিএসএলভি, জিএসএলভি ও সর্বোপরিভারতীয় জাতীয় উপগ্রহ ব্যবস্থা কৃত্রিম উপগ্রহ সিরিজগুলি ভারতের সফল মহাকাশ-কর্মসূচির স্বাক্ষর। ২০০৮ সালে চাঁদের মাটিতে অবতীর্ণ হয় প্রথম ভারতীয় মহাকাশযানচন্দ্রযান-১। চন্দ্রযান-১-এর পাঠানো তথ্য থেকেনাসার তত্ত্বাবধানে ব্রাউন ইউনিভার্সিটিতে মুন মিনারেলজি ম্যাপার যন্ত্রে বিস্ময়করভাবে প্রভূত পরিমাণ হাইড্রক্সিল আয়ন এবং বরফের অস্তিত্ব ধরা পড়েছে।[১৮৪] দেশীয় বিমানশক্তির ক্ষেত্রে বৈকল্পিক শক্তি হিসেবে অ্যাডভান্সড লাইট হেলিকপ্টার ও এলসিএ তেজস-এর নাম করা যায়। লারসেন অ্যান্ড টাব্রো, ডিএফএল-এর মতো কোম্পানিগুলির সাহায্যে আবাসন ও পরিকাঠামো শিল্পেও ভারত আজ উল্লেখযোগ্যভাবে অগ্রসর।
২০০৩ সালে সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অফ অ্যাডভান্সড কম্পিউটিং তৈরি করে ভারতের প্রথম সুপারকম্পিউটারপরম পদ্ম। এটি পৃথিবীর দ্রুততম সুপারকম্পিউটারগুলির অন্যতম।[১৮৫] ১৯৯০-এর দশকেঅর্থনৈতিক উদারীকরণ এবংতথ্য প্রযুক্তি বিপ্লব তথ্যপ্রযুক্তির দুনিয়ায় এক অগ্রণী রাষ্ট্র হিসেবে ভারতকে বিশ্বের মঞ্চে উপস্থাপিত করে। বর্তমানেআইবিএম,মাইক্রোসফট, সিসকো সিস্টেমস, ইনফোসিস, টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিস, উইপ্রো ও অন্যান্য নেতৃস্থানীয় ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলি ভারতেরবেঙ্গালুরু,হায়দ্রাবাদ,চেন্নাই প্রভৃতি শহরে তাদের প্রধান কার্যালয় স্থাপন করেছে।
খেলাধুলা
বার্লিন অলিম্পিকে সোনা জয়ী ভারতীয় হকি দলকলকাতার বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তমফুটবল মাঠ
ভারতীয় দলের ডেভিস কাপ বিজয়ের পর থেকে ভারতেটেনিসের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকেফুটবলপশ্চিমবঙ্গ,উত্তর-পূর্ব ভারত,গোয়া ওকেরলে বেশ জনপ্রিয়।[১৮৬]ভারত জাতীয় ফুটবল দল বহুবারসাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন কাপ জিতেছে। ভারত ১৯৫১ ও ১৯৮২ সালেএশিয়ান গেমস আয়োজন করেছিল। এছাড়াও ভারত ছিল ১৯৮৭ ও ১৯৯৬ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক দেশ ছিল; ভারত ২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক দেশ।দাবা খেলার উদ্ভবও হয়েছিল ভারতে। দেশে গ্রান্ডমাস্টার দাবাড়ুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় আজ দাবা ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় একটি খেলা।[১৮৭] এছাড়াও দেশের অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী জনপ্রিয় খেলা হলকাবাডি, খো খো, ও গুলি ডান্ডা ইত্যাদি। ভারতে প্রাচীন যোগব্যয়াম এবং বিভিন্ন ভারতীয় মার্শাল আর্ট, কালারিপ্পায়াত্তু, বার্মা কলাই ইত্যাদি আজও জনপ্রিয়। ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক ক্রীড়া পুরস্কার হলরাজীব গান্ধী খেলরত্ন ওঅর্জুন পুরস্কার (খেলোয়াড়দের জন্য) এব দ্রোণাচার্য পুরস্কার (কোচিং-এর জন্য)।
Kulke, Hermann (২০০৪)।A History of India। 4th edition। Routledge। xii, ৪৪৮।আইএসবিএন০৪১৫৩২৯২০৫।{{বই উদ্ধৃতি}}:অজানা প্যারামিটার|coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= প্রস্তাবিত) (সাহায্য);অজানা প্যারামিটার|nopp= উপেক্ষা করা হয়েছে (|no-pp= প্রস্তাবিত) (সাহায্য)
Dikshit, K.R. (২০০৭)।"India: The Land"।Encyclopædia Britannica। পৃ. ১–২৯। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০০৭।{{বই উদ্ধৃতি}}:অজানা প্যারামিটার|coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= প্রস্তাবিত) (সাহায্য)
Government of India (২০০৭)।India Yearbook 2007। Publications Division, Ministry of Information & Broadcasting।আইএসবিএন৮১-২৩০-১৪২৩-৬।
Heitzman, J. (১৯৯৬)।India: A Country Study। Library of Congress (Area Handbook Series)।আইএসবিএন০-৮৪৪৪-০৮৩৩-৬।{{বই উদ্ধৃতি}}:অজানা প্যারামিটার|coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= প্রস্তাবিত) (সাহায্য)
Ali, Salim; Ripley, S. Dillon (১৯৯৫),A Pictorial Guide to the Birds of the Indian Subcontinent, Mumbai: Bombay Natural History Society and Oxford University Press. Pp. 183, 106 colour plates by John Henry Dick,আইএসবিএন০-১৯-৫৬৩৭৩২-১
Blatter, E.; Millard, Walter S. (১৯৯৭),Some Beautiful Indian Trees, Mumbai: Bombay Natural History Society and Oxford University Press. Pp. xvii, 165, 30 colour plates,আইএসবিএন০-১৯-৫৬২১৬২-X{{citation}}:|publisher=-এ ইটালিক বা গাঢ় লেখা অনুমোদিত নয় (সাহায্য)
Israel, Samuel; Sinclair (editors), Toby (২০০১),Indian Wildlife, Discovery Channel and APA Publications.,আইএসবিএন৯৮১২৩৪৫৫৫৮{{citation}}:|last2= প্যারামিটারে সাধারণ নাম রয়েছে (সাহায্য)
Prater, S. H. (১৯৭১),The book of Indian Animals, Mumbai: Bombay Natural History Society and Oxford University Press. Pp. xxiii, 324, 28 colour plates by Paul Barruel.,আইএসবিএন০-১৯-৫৬২১৬৯-৭.{{citation}}:|publisher=-এ ইটালিক বা গাঢ় লেখা অনুমোদিত নয় (সাহায্য);|আইএসবিন= মান: অবৈধ অক্ষর পরীক্ষা করুন (সাহায্য)
Rangarajan, Mahesh (editor) (১৯৯৯),Oxford Anthology of Indian Wildlife: Volume 1, Hunting and Shooting, New Delhi: Oxford University Press. Pp. xi, 439,আইএসবিএন০-১৯-৫৬৪৫৯২-৮{{citation}}:|first1= প্যারামিটারে সাধারণ নাম রয়েছে (সাহায্য);|publisher=-এ ইটালিক বা গাঢ় লেখা অনুমোদিত নয় (সাহায্য)
Rangarajan, Mahesh (editor) (১৯৯৯),Oxford Anthology of Indian Wildlife: Volume 2, Watching and Conserving, New Delhi: Oxford University Press. Pp. xi, 303,আইএসবিএন০-১৯-৫৬৪৫৯৩-৬{{citation}}:|first1= প্যারামিটারে সাধারণ নাম রয়েছে (সাহায্য);|publisher=-এ ইটালিক বা গাঢ় লেখা অনুমোদিত নয় (সাহায্য)
Tritsch, Mark F. (২০০১),Wildlife of India, London: Harper Collins Publishers. Pp. 192,আইএসবিএন০-০০-৭১১০৬২-৬
Karanth, K. Shivarama (১৯৯৭),Yakṣagāna, (Forward by H. Y. Sharada Prasad). Abhinav Publications. Pp. 252,আইএসবিএন৮১৭০১৭৩৫৭৪.{{citation}}:|আইএসবিন= মান: অবৈধ অক্ষর পরীক্ষা করুন (সাহায্য)
Kiple, Kenneth F.; Ornelas, Kriemhild Coneè, সম্পাদকগণ (২০০০),The Cambridge World History of Food, Cambridge: Cambridge University Press,আইএসবিএন০-৫২১-৪০২১৬-৬
Majumdar, Boria; Bandyopadhyay, Kausik (২০০৬),A Social History Of Indian Football: Striving To Score, Routledge,আইএসবিএন০-৪১৫-৩৪৮৩৫-৮{{citation}}:উদ্ধৃতিতে খালি অজানা প্যারামিটার রয়েছে:|month= (সাহায্য)
Vilanilam, John V. (২০০৫),Mass Communication in India: A Sociological Perspective, Sage Publications,আইএসবিএন০-৭৬১৯-৩৩৭২-৭{{citation}}:উদ্ধৃতিতে খালি অজানা প্যারামিটার রয়েছে:|month= (সাহায্য)
Yves Thoraval:The Cinemas of India (1896–2000). MacMillan, 2000,আইএসবিএন০-৩৩৩-৯৩৪১০-৫
↑"CONSTITUENT ASSEMBLY OF INDIA — VOLUME XII"।Constituent Assembly of India: Debates। parliamentofindia.nic.in, National Informatics Centre। ২৪ জানুয়ারি ১৯৫০। ২১ জুলাই ২০১১ তারিখেমূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০০৭।The composition consisting of the words and music known as Jana Gana Mana is the National Anthem of India, subject to such alterations in the words as the Government may authorise as occasion arises, and the song Vande Mataram, which has played a historic part in the struggle for Indian freedom, shall be honoured equally with Jana Gana Mana and shall have equal status with it.
↑টীকা:ভারত সরকারআফগানিস্তানকেও ভারতের সীমান্তবর্তী রাষ্ট্র মনে করে। এর কারণ, আফগানিস্তান-সীমান্তবর্তী অঞ্চলটিসহ সমগ্রজম্মু ও কাশ্মীরকে ভারত সরকার ভারতের অংশ মনে করে। ১৯৪৮ সালেরাষ্ট্রসংঘের মধ্যস্থতায় একটি যুদ্ধবিরতি উক্ত রাজ্যটির ভারতীয় ওপাকিস্তানি অংশের সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছিল। এরপর থেকেই আফগানিস্তান-সীমান্তবর্তী অঞ্চলটিপাক-অধিকৃত কাশ্মীরের অন্তর্গত।
↑Kumar, Hari; Travelli, Alex; Mashal, Mujib; Chang, Kenneth (২৩ আগস্ট ২০২৩),"'India Is on the Moon': Lander's Success Moves Nation to Next Space Chapter",The New York Times, ২৩ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকেআর্কাইভকৃত, সংগ্রহের তারিখ ২ অক্টোবর ২০২৩,Two visitors from India — a lander named Vikram and a rover named Pragyan — landed in the southern polar region of the moon on Wednesday. The two robots, from a mission named Chandrayaan-3, make India the first country to ever reach this part of the lunar surface in one piece — and only the fourth country ever to land on the moon. ... The spacecraft stopped to hover about 150 yards above the surface for a few seconds, then resumed its downward journey until it settled gently on the surface, about 370 miles from the south pole.
↑(a)"Kashmir, region Indian subcontinent",এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা, ১৩ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকেআর্কাইভকৃত, সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১৯,Kashmir, region of the northwestern Indian subcontinent... has been the subject of dispute between India and Pakistan since the partition of the Indian subcontinent in 1947.;(b)Pletcher, Kenneth,"Aksai Chin, Plateau Region, Asia",এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা, ২ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকেআর্কাইভকৃত, সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৯,Aksai Chin, Chinese (Pinyin) Aksayqin, portion of the Kashmir region, ... constitutes nearly all the territory of the Chinese-administered sector of Kashmir that is claimed by India;(c)Bosworth, C. E (২০০৬)।"Kashmir"।Encyclopedia Americana: Jefferson to Latin।Scholastic Library Publishing। পৃ. ৩২৮।আইএসবিএন৯৭৮-০-৭১৭২-০১৩৯-৬।KASHMIR, kash'mer, the northernmost region of the Indian subcontinent, administered partly by India, partly by Pakistan, and partly by China. The region has been the subject of a bitter dispute between India and Pakistan since they became independent in 1947
↑India's northernmost point is the region of the disputedসিয়াচেন হিমবাহ in Jammu and Kashmir; however, the Government of India regards the entire region of the former princely state ofজম্মু ও কাশ্মীর (including theNorthern Areas currently administered by Pakistan) to be its territory, and therefore assigns the longitude 37° 6' to its northernmost point.
↑Hermann, Kulke (২০০৪)।A History of India। Routledge। পৃ. ৩৮৪।আইএসবিএন৯৭৮-০৪১৫৩২৯১৯৪।{{বই উদ্ধৃতি}}:অজানা প্যারামিটার|coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= প্রস্তাবিত) (সাহায্য)
↑Echeverri-Gent, John (২০০২), "Politics in India's Decentred Polity", Ayres, Alyssa; Oldenburg, Philip (সম্পাদকগণ),Quickening the Pace of Change, India Briefing, London: M.E. Sharpe, পৃ. ১৯–৫৩,আইএসবিএন০-৭৬৫৬-০৮১২-X at pp. 19-20;Sinha, Aseema (২০০৪), "The Changing Political Economy of Federalism in India",India Review,৩ (1):২৫–৬৩,ডিওআই:10.1080/14736480490443085,আইএসএসএন1473-6489 at pp 25-33
↑"Tenure of President's office"।The Constitution Of India। Constitution Society। ২১ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকেআর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০০৭।The President shall hold office for a term of five years from the date on which he enters upon his office
↑"Election of President"।The Constitution Of India। Constitution Society। ২১ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকেআর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০০৭।The President shall be elected by the members of an electoral college
↑"Appointment of Prime Minister and Council of Ministers"।The Constitution Of India। Constitution Society। ২১ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকেআর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০০৭।The Prime Minister shall be appointed by the President and the other Ministers shall be appointed by the President on the advice of the Prime Minister.
↑কখNeuborne, Burt (২০০৩)। "The Supreme Court of India"।International Journal of Constitutional Law।১ (1):৪৭৬–৫১০।ডিওআই:10.1093/icon/1.3.476। at p. 478.
↑Sripati, Vuayashri (১৯৯৮)। "Toward Fifty Years of Constitutionalism and Fundamental Rights in India: Looking Back to See Ahead (1950–2000)"।American University International Law Review।১৪ (2):৪১৩–৪৯৬। at pp. 423-424
↑"Taj Mahal"।World Heritage List। UNESCO World Heritage Centre। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকেআর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০০৮।The World Heritage List includes 851 properties forming part of the cultural and natural heritage which the World Heritage Committee considers as having outstanding universal value.{{ওয়েব উদ্ধৃতি}}:অজানা প্যারামিটার|accessmonthday= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য);অজানা প্যারামিটার|accessyear= উপেক্ষা করা হয়েছে (|access-date= প্রস্তাবিত) (সাহায্য)
↑Das, N.K. (২০০৬)।"Cultural Diversity, Religious Syncretism and People of India: An Anthropological Interpretation"।Bangladesh e-Journal of Sociology।৩ (2nd)। ISSN 1819-8465। ২০ নভেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকেআর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০০৭।The pan-Indian, civilizational dimension of cultural pluralism and syncretism encompasses ethnic diversity and admixture, linguistic heterogeneity as well as fusion, and variations as well as synthesis in customs, behavioural patterns, beliefs and rituals.{{সাময়িকী উদ্ধৃতি}}:অজানা প্যারামিটার|month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য);উদ্ধৃতিতে খালি অজানা প্যারামিটার রয়েছে:|coauthors= (সাহায্য)
↑"The Nobel Prize in Literature 1913"।Nobel Prize Winners। Nobel Foundation। ১৫ অক্টোবর ২০০৮ তারিখে মূল থেকেআর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০০৮।{{ওয়েব উদ্ধৃতি}}:অজানা প্যারামিটার|accessmonthday= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য);অজানা প্যারামিটার|accessyear= উপেক্ষা করা হয়েছে (|access-date= প্রস্তাবিত) (সাহায্য)
↑(Karanth 1997, পৃ. 26). Quote: "TheYakṣagāna folk-theatre is no isolated theatrical form in India. We have a number of such theatrical traditions all around Karnataka... In far off Assam we have similar plays going on by the name ofAnkia Nat, in neighouring Bengal we have the very popularJatra plays. Maharashtra hasTamasa. (p. 26)
↑1.Encyclopaedia Britannica (2008),"Tamil Literature."ওয়েব্যাক মেশিনেআর্কাইভকৃত ১০ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে Quote: "Apart from literature written in classical (Indo-Aryan) Sanskrit, Tamil is the oldest literature in India. Some inscriptions on stone have been dated to the 3rd century BC, but Tamil literature proper begins around the 1st century AD. Much early poetry was religious or epic; an exception was the secular court poetry written by members of thesangam, or literary academy (see Sangam literature)."2.Ramanujan 1985, পৃ. ix-xQuoteওয়েব্যাক মেশিনেআর্কাইভকৃত ১১ মে ২০১১ তারিখে: "These poems are 'classical,' i.e. early, ancient; they are also 'classics,' i.e. works that have stood the test of time, the founding works of a whole tradition. Not to know them is not to know a unique and major poetic achievement of Indian civilization. Early classical Tamil literature (c. 100 BC–AD 250) consists of the Eight Anthologies (Eţţuttokai), the Ten Long Poems (Pattuppāţţu), and a grammar called theTolkāppiyam or the 'Old Composition.' ... The literature of classical Tamil later came to be known asCankam (pronouncedSangam) literature. (pp. ix-x)"
↑কখMedora, Nilufer (২০০৩)। "Mate selection in contemporary India: Love marriages versus arranged marriages"। Hamon, Raeann R. and Ingoldsby, Bron B. (সম্পাদক)।Mate Selection Across Cultures। SAGE। পৃ. ২০৯–২৩০।আইএসবিএন০৭৬১৯২৫৯২৯।{{বই উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: একাধিক নাম: সম্পাদকগণের তালিকা (লিঙ্ক)